আল-হেরা মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা, আমতলী

উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থানসহ একাধিকবার পুরষ্কারপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমতলী - বরগুনা।

প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল


হাফেজ মাওঃ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ বেলাল
আমার শিক্ষা গুরু আমার মায়ের কাছে আমার বয়স যখন ৭বছর তখন আমার মা বাবা ঢাকা মুন্সীগঞ্জ একটা মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দেন আলহামদুলিল্লাহ ছোট বেলা থেকেই মা বাবার সাশন এবং ইসলামের ধর্মীয় বিধি-বিধান আল্লাহ আল্লাহর রাসূলের বিধান অনুযায়ী চলার তাকিদ পেয়েছি  কারণ আমার মা অনেক আমলদার ছিলেন নিয়মিত নামায রোজা খাস পর্দা মেনে চলতেন। চাল-চরিত্র ছিল তার খুবই চমৎকার। তিনি ছিলেন সবার সেরা এক মা। ফজরের নামাযের পর নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত করতেন।  কুরআনের সুবাসে মাদ্রাসায় পরা শুরু করলাম হাফেজ হলাম ২০০৯ সালে কিতাব বিভাগে ভর্তি হলাম ঢাকার শাইখুল হাদীস আল্লামা ক্বারী আবু ইউসুফ হাফি এর মাদ্রাসায় কামরাঙ্গীরচর হুজুর তখন তারা মসজিদের খতিব ছিলেন পরতে শুরু করলাম আলহামদুলিল্লাহ দাওরা হাদীস মাস্টার্স শেষ হলো দীনের খেদমত শুরু করলাম আমার ওস্তাদ  আল্লামা মুফতি জামাল উদ্দিন সাহেবের বাড়ির মাদ্রাসায় মাদারীপুর খেদমতের বয়স যখন সাত বছর অতিক্রম করলাম কায়েম হল আলহেরা মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা  ২০১৯ইং সালের সেপ্টেম্বর মাসে  আমার বয়স তখন২৩ বছর এই আলহেরা মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার শুভ যাত্রা। আমার মনে আনন্দের জোয়ার বয়ে চলছে। বহুদিন আগের লালিত স্বপ্ন আজ বাস্তবে পেয়ে আমি মহান আল্লাহর সিজদায় লুটিয়ে পড়ি।

আমার মা এবং ওস্তাদের কাছ থেকে পাওয়া কুরআনের পথ বেয়ে সেই শিশুকাল থেকে এ পর্যন্ত এসেছি। কুরআনের আলোকে নিজেকে, পরিবারকে ও সমাজকে আলোকিত করার সংগ্রাম করে করেই এ পর্যন্ত এসেছি। অথচ সেই কুরআন শিক্ষালাভের কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারিনি। ফলে সারাদেশের মত আমার গ্রামের গণ-মানুষের সন্তানদের অন্ধকারে ছুড়ে ফেলা হচ্ছে।
শয়তান কিন্তু বসে নেই। এসব সন্তানদেরকে তাদের বাবা মায়ের সাথে অজ্ঞতা পাপাচার আর অপকর্মের মধ্যে পড়ে দোজখের পথে নিয়ে যাচ্ছে। ইসলামের পথ যেন তাদের কাছে অনেক কঠিন। কুরআন থেকে তারা অনেক দূরে সরে যাচ্ছে। দুনিয়া আর আখেরাত তাদের জন্য হয়ে উঠছে অশান্তির মহা আখড়া। গভীর সেই আযাব থেকে তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে এবার সুযোগ পেলাম। সাহস করে এগিয়ে চললাম। সব বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করলাম। শুরু হল কুরআনের কারখানা। আল্লাহর রহমত ও বরকতে কিছু ইসলামী চিন্তাবিদ ও দাতার সহযোগিতা পেলাম। পেলাম সেরা ক্বারী, হাফেজ নাজমুল হাসান সাহেব এবং আরো শিক্ষকদেরকে। সবার সহযোগিতা ও পরামর্শে আলহেরা মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা  কিছুদিনের মধ্যেই ১২০জন ছাত্র এবং৮ জন উস্তাদ নিয়মিত কুরআন শিক্ষার ক্লাস করে চলেছে। সুদক্ষ ক্বারী ও হাফেজদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় মহিষকাটা বাজারের উত্তর মাথায়  এখন পবিত্র কুরআনের আওয়াজে সরগম ভাব। সারাক্ষণ এখানে উচ্চস্বরে কুরআন তেলাওয়াতের ধুম চলছে। এ পাড়ায় কেউ এলে শিশু থেকে শুরু করে সবাই সালামের ধনি দেয় বলে আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ।  অথচ আগে এখানে এরূপ শান্তির সম্ভাষণ ছিল না। আল্হামদুল্লিাহ বলে এলাকার বড়রা, ছোটরা, গরীবেরা, ধনীরা সবাই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে লাগলো। শিশুরা যখন তাদের বাবা মাকে সালাম দেয় তখন তাদের মনের মাঝে মহা আনন্দের ঢেউ খেলে। অশ্রু ভেজা চোখে নিষ্পাপ শিশুদের বুকে জড়িয়ে ধরে। দারুন শান্তিতে তাদের আত্মা সঞ্জীবনী শক্তি ফিরে পায়। এলাকাবাসীর দোয়া এবং প্রচেষ্টা সবাই যেন কোরানের হাফেজ এবং আমলদার হতে পারে  এখন আলহেরা মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসায় আবাসিক ১২০ জন ছাত্র খেয়ে পড়ে লেখাপড়া করছে  আবাসিক প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন এখানে  আবাসিক শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে তাদের  সুশৃংখল ও পরিপাটি জীবন পরিচালনা সহ কুরআনের চর্চা এগিয়ে চলেছে আরো সুন্দরভাবে। তাতে মাদ্রাসার কলেবর আরো বেড়ে গেল। শিশুদের মায়েদের মনেও দারুণ আনন্দ। আঁধার চিরে আলোর পথ পেয়ে নারী পুরুষ সবাই যেন জীবনের সঠিক পথ ফিরে পেল আলহামদুলিল্লাহ হুফফাজের টেনিংপ্রাপ্ত এবং মেহনতি ওস্তাদের সুশিক্ষায় ছাত্রদের লেখাপড়ার মান বৃদ্ধি পেলো ২০২১ সালে হুফুফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত জেলা ব্যাপী হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আল হেরা মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার দুইজন ছাত্র ২য় এবং ৩য় অর্জন লাভ করেন ২০২২ সালে উপজেলা ব্যাপী ১১ টি এবং জেলা পর্যায়ে সাতটি পুরস্কার অর্জন করেন ২০২৩ সালে উপজেলা ব্যাপী দশটি পুরস্কার অর্জন করেন ২০২৪ সালে ১৬টি পুরস্কার অর্জন করেন আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের সকলের দোয়া এবং ভালবাসায় এই এই প্রতিষ্ঠানকে আরো সামনে এগিয়ে নিতে চাই আপনারা সকলেই দোয়া করবেন আমিন।